সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২০২২-০৯-২১ ১১:১৫:২১
প্রকল্প প্রোফাইল
পটভূমি :
বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের যুগোপযোগী নীতির কারণে বাংলাদেশের কৃষি আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য একটি রোল মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কৃষির সকল সেক্টরেই আমাদের সফলতা অভাবনীয়। মাঠ ফসল বিশেষ করে দানা জাতীয় শস্য উৎপাদনে আমরা বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করে আসছি। এ অর্জন ধরে রাখার পাশাপাশি আমাদের এখন নজর দিতে হবে উদ্যান ফসল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে। আমাদের বিদ্যমান খোরপোশের কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ ও লাভজনক করতে নতুন সম্ভবনাময় ফসলের দিকে নজর দিতে হবে। সে লক্ষ্যে কাজুবাদাম ও কফির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে আবাদ বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশের অন্যান্য পাহাড়ী এলাকার ভূ-প্রকৃতির অবস্থান ও আবহাওয়া বিবেচনায়
কফি ও কাজুবাদাম জাতীয় ফসল আবাদের অনেক সুযোগ রয়েছে। দরিদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের
এসকল ফসল আবাদে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। এমতাবস্থায়, কাজুবাদাম ও কফির উৎপাদন বৃদ্ধি,
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা, পুষ্টি চাহিদা পুরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য গুণগতমান সম্পন্ন ও নিরাপদ খাদ্য চাহিদা পূরণ,
২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের মাধ্যমে
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে কৃষি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ কৃষিতে
বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে এবং সহনীয় কৃষি ব্যবস্থার উপর গবেষণা
ও উন্নত জাত ও কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উদ্দেশ্যে “কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন
ও সম্প্রসারণ প্রকল্প” শীর্ষক এ প্রকল্পটি গ্রহন করা হয়েছে।
বিশে বৃক্ষ জাতীয় ফসলের বাণিজ্যে কাজুবাদাম তৃতীয় এবং বাদাম জাতীয় ফলের বাণিজ্যে কাজুবাদাম প্রথম স্থান দখল করে আছে। বর্তমানে সারা বিশে কাজুবাদামের বৈশিক বাণিজ্য ১০.০০ বিলিয়ন ডলারের মত। এর মধ্যে ভিয়েতনামই করে ৪.০০ বিলিয়ন ডলারের মত। বর্তমানে সারা বিশে^ মোট ৫৯.৩০ লাখ টন কাজুবাদাম উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় ভিয়েতনামে। ২০১৮ সালের হিসাব মোতাবেক ভিয়েতনাম এর সর্বমোট উৎপাদিত কাজুবাদামের পরিমাণ ২৬.৬৬ লাখ টন যা বৈশিক উৎপাদনের ৪৪.৯০ ভাগ। অন্যদিকে বিশে মোট ৯০ লাখ টন কফি উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বিশি উৎপাদিত হয় ব্রাজিলে। ২০২০ সালের হিসাব মোতাবেক ব্রাজিল এর সর্বমোট উৎপাদিত কফির পরিমান ৩৫.৫৮ লাখ টন যা বৈশিক উৎপাদনের ৪০ ভাগ। ভিয়েতনামে সর্বমোট কফির উৎপাদন হয় ১৮.৩০ লাখ টন। বিশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের কফির বাণিজ্য হয়ে থাকে।
প্রাথমিক অবস্থায় কাজু বাদাম গাছ পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের সাথে ভূমিক্ষয়, ভূমিধ্বস ইত্যাদির জন্য লাগানো হলেও বর্তমানে এই গাছটি দ্রুত বর্ধনশীল, পরিবেশ বান্দব এবং লাভজনক। ইহার বীজ থেকে পাওয়া বাদাম সুস্বাদু, মুখরোচক ও পুষ্টিকর এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়েও মূল্যবান। বাদামের খোলসের তেল শিল্প কাজে ব্যবহৃত মূল্যবান দ্রব্য। তাছাড়া বাদামের ওপরের অংশে ফল থেকে জুস, ভিনেগার এবং এলকোহল তৈরী করা যায়। আমাদের দেশের জলবায়ু কাজুবাদাম চাষের বেশ সহায়ক। পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক কাজুবারাম চাষের উজ্জল সম্ভবনা রয়েছে। কেননা এখানে স্বল্প মূল্যে প্রচুর জমি পাওয়া যায়, যেখানে কাজুবাদাম চাষ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
আর ক্যাফেইন
সমৃদ্ধ কফি পৃথিবীতে অন্যান্য পানীয় এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি সমাদৃত। কফি কাজ করার
সামর্থ বৃদ্ধি করে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন কয়েক কাপ কফি পানে দীর্ঘ জীবন লাভ করা
যায়। এ পানীয় ক্যান্সার প্রতিরোধেও কাজ করে।
কফি পৃথিবীর প্রায় ৭০ টি দেশে উৎপন্ন হয়ে থাকে। কফির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমানে
বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় রুমা উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রচুর কাফি চাষ হচ্ছে। এখন কার আবহাওয়া কফি চাষের জন্য উপযুক্ত। এদেশে
কফি চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানির যথেষ্ট সুযোগ
রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের অন্যান্য পাহাড়ি এলাকার ভূ -প্রকৃতির অবস্থান ও আবহাওয়া বিবেচনায় কফি ও কাজু বাদাম জাতীয় ফসল আবাদের অনেক সুযোগ রয়েছে। দরিদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের এসকল ফসল আবাদে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। এমতাবস্থায়, কাজু বাদাম ও কফির উৎপাদন বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য গুণগতমান সম্পন্ন ও নিরাপদ খাদ্য চাহিদা পূরণ, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি ) বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০১৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে কৃষি ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারসহ কৃষিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এবং সহনীয় কৃষি ব্যাবস্থার উপর গবেষণা ও উন্নত জাত ও কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উদ্দেশে "কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্পসারণ " শীর্ষক এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য :
সামগ্রিক
উদ্দেশ্য: ডিএই অঙ্গঃ
প্রকল্পের
সামগ্রিক উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি জেলার ২৫টি উপজেলাসহ অন্যান্য
উপযোগী এলাকায় কফি ও কাজুবাদাম চাষ সম্প্রসারণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং
বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকের আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার টেকসই
উন্নয়ন।
সুনিদিষ্ট উদ্দেশ্য :
১. কাজুবাদাম ও কফির জাত ও ব্যাবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং
সম্প্রসারণের মাধ্যমে উৎপাদন ৫০% বৃদ্ধি এবং বিদ্যমান উৎপাদন এলাকা বাড়িয়ে ২০০০ হেক্টর হতে ৬০০০ হেক্টর পর্যন্ত বৃদ্ধি।
২. উৎপাদিত
কাজুবাদাম এবং কফির দাতের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানি
আয় বৃদ্ধি।
৩. প্রকল্প
এলাকায় কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়ন (৪৯৫০০ জন কৃষক/কৃষাণী প্রশিক্ষণ),কর্মসূষ্ঠানের সুযোগ
সৃষ্টিসহ দারিদ্র বিমোচন ও পুষ্টিমান উন্নয়নে সহায়তা।
৪. পাহাড়ি
এলাকায় পতিত জমি কাজে লাগিয়ে স্বল্প পুঁজিতে আগ্রহী ও অগ্রগণ্য কৃষকদের দ্বারা উৎপাদিত
কাজুবাদাম ও কফি প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ করা।
প্রকল্প প্রোফাইল :
পিইসি সভায়
অনুমোদন : ২৩/০৯/২০২০ খ্রী:
একনেক সভায়
অনুমোদন : ১৬/০২/২০২১ খ্রী:
পরিকল্পনা
বিভাগ কর্তৃক অনুমোদন : ০৮/০৩/২০২১ খ্রী:
প্রশাসনিক
অনুমোদন : ৩০/০৩/২০২১ খ্রী:
মোট প্রকল্প বায় (কোটি টাকায় ):
(ক) মোট : ২১১৮৪৭৫
(খ) জিওবি : ২১১৮৪৭৫
(গ) প্রকল্প
সাহায্য : _
প্রকল্পের মেয়াদকাল :
(ক) আরম্ভ : জানুয়ারী ২০২১
(খ) সমাপি : ডিসেম্বর ২০২৫